বিদ্রোহ যখন বর্ণমালায় মিশে যায়

বিদ্রোহ যখন বর্ণমালায় মিশে যায়
বিদ্রোহ যখন বর্ণমালায় মিশে যায়

বিদ্রোহ যখন বর্ণমালায় মিশে যায়, ‘একদিন দুপুরে প্রেসে গিয়ে শুনলাম, আগের রাতে পুলিশ এসে সংকলনের

সব লেখা, কম্পোজিং ব্যাপারটা নিয়ে গেছে। এই খবর শুনে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। সেখান থেকে সোজা

কার্জন হলে, পুকুরের পাশের বিল্ডিংয়ে গিয়ে চুপচাপ আমাদের পরিসংখ্যানের ক্লাসে বসলাম।

‘সূর্য জ্বালা নামে একটি সংগ্রহ নারিন্দা লেনের একটি প্রেসে ছাপানোর জন্য দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ অভিযান চালিয়ে

সব নিয়ে যায়। ফলে ১৯৮৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবসে যে সংকলন প্রকাশের কথা ছিল তা বের

করা যায়নি। পরবর্তীতে, ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই নামে একুশের আরেকটি সংকলন

প্রকাশিত হয়।বামপন্থী রাজনৈতিক শক্তি, বিশেষ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন,

ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি কবিতা, আবৃত্তি, সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক, চিত্রকলা এবং আরও অনেক কিছুতে প্রধান

ভূমিকা পালন করেছিল।

আরও নতুন নিউস পেতে আমাদের সাইট:ukhealthz.xyz

বিদ্রোহ যখন বর্ণমালায় মিশে যায়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদ। একুশেও তাদের মতো করে সময়ের সেরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সংকলন প্রকাশ করেছে। তারা আজ একটি প্রজন্মের সেরা মানুষের যাত্রা এবং উত্থানের সাক্ষী; তাদের সব স্বপ্ন, আকাঙ্খা ও বিদ্রোহের আন্দোলন।বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রথম প্রকাশনী এক প্রচ্ছদে এসব সংকলন প্রকাশ করেছে। মতিউর রহমান সম্পাদিত বইটির নাম বিদ্রোহী বর্ণমালা। এই বইটি ইতিহাসের একটি মূল্যবান দলিল।কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে ছিলেন জসীমউদ্দীন, সুফিয়া কামাল, রণেশ দাশগুপ্ত, শহীদুল্লাহ কায়সার, শামসুর রাহমান, জহির রায়হান, আনিসুজ্জামান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, শহীদ সাবের, বদরুদ্দীন উমর, ফয়েজ আহমেদ, সৈয়দ শামসুল হক, মাহমুদ আল জামান, মফিজুল হক প্রমুখ। হক প্রমুখ।প্রতিটি সংকলন প্রকাশের পেছনে কত স্মৃতি!কত, কত জায়গা থেকে যে লেখা, ছবি ও অলংকার সংগ্রহ করেছেন তারা!

জয়নুল আবেদিন কামরুল হাসান

আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ কিবরিয়া, কাইয়ুম চৌধুরী, দেবদাস চক্রবর্তী, রশিদ চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, ইমদাদ হোসেন, আবদুল মুক্তাদির, প্রাণেশ কুমার মণ্ডল, হাসেম খান, রফিকুন্নবী প্রমুখের আঁকা ছবি। দেশের শ্রেষ্ঠ লেখক-কবি-শিল্পীদের কোনো লেখা বা ছবি সংকলনে প্রকাশিত হয়নি? তরুণ কবি-সাহিত্যিকরা যারা লিখেছেন, যারা ছবি এঁকেছেন তাদের অনেকেই এখন সুপরিচিত।’আমার মনে আছে ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে সারা দিন এবং সারা রাত প্রেসে ছিলাম। পুরো প্রেসের সমস্ত স্টাফ এবং ৮-১০ টি মেশিন সেই রাতে আমাদের জন্য কাজ করেছিল সে একজন বিশাল ওয়ার্কহলিক! ‘এই কাজটি ১৯৭০ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি সহ বিশেষ উপলক্ষে চলছে।

পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন এবং

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদ আকর্ষণীয় এবং বৈচিত্র্যময় সব সংগ্রহ প্রকাশ করছিল।একুশের সকালে শহীদ মিনার ও বাংলা একাডেমিতে সেগুলো বিতরণ ও বিক্রি করা হয়।সে সময় আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হাসনাত, মফিদুল হক, মুনিরুজ্জামান, হিলালুদ্দীন, মাহফুজ আনাম এবং মতিউর রহমান সংকলন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে জড়িত ছিলেন। একজন মানুষ দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। শুধু লেখা বা আঁকার ক্ষেত্রেই নয়, সংগ্রহের ভিতরের অংশে ব্যবহৃত সংবাদপত্রের কভার, টিউল পেপার, কার্টিজ পেপার বা মোটা বোর্ড পেপার বা আর্ট কার্ডের অভিনব বাঁধাই। এই বৈচিত্র্য এবং নিরীক্ষা তাদের উত্সর্গ সম্পর্কে কিছু সূত্র দেবে। কোন দেশের তরুণ প্রজন্মের রুচি কেমন, তাদের চিন্তাভাবনার পরিবর্তন কেমন ছিল, রাষ্ট্রের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল, দেশের মানুষকে নিয়ে তাদের ভাবনা—সবকিছুই পাওয়া যাবে।

 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *