তার স্ত্রীসহ দুই শতাধিক পিকআপ চুরি হয়েছে, তাকে পিকআপ ভ্যান চোর চক্রের সদস্য হিসাবে গ্রেপ্তার
করা হয়েছিল এবং সাত মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এই চুরির মাধ্যমে বাইরে গিয়ে আরও টাকার
মালিক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর নিজেই চোর চক্র গড়ে তোলেন। বাগেরহাটের আজিজুল
শেখ রাজু গত দুই বছরে দুই শতাধিক পিকআপ ভ্যান চুরি করেছে এই চক্রের মাধ্যমে। তাদের কার্যক্রম প্রধানত
রাজধানী এবং এর চারপাশে আবর্তিত হয়।শুক্রবার রাজধানীর ডেমরা থেকে আজিজুলসহ পাঁচজনকে
গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে আজিজুলের
দ্বিতীয় স্ত্রী উম্মে হানিও রয়েছেন। সাত মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আজিজুল। বিয়ের পর উম্মে হানিও
চোর চক্রে জড়িয়ে পড়ে।
আরও নতুন নিউস পেতে আমাদের সাইট:ukhealthz.xyz
তার স্ত্রীসহ দুই শতাধিক পিকআপ চুরি হয়েছে
গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- হক ফজলু, ইউসুফ ও আবদুল্লাহ শিকারী।ডিবির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চুরির পর গাড়ির মালিককে ফোন করে টাকা আদায় করাই এই চক্রের কৌশল। এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে পিকআপ ভ্যান চুরি করে আসছে।ডিবি জানায়, কদমতলী থানার একটি মামলার তদন্তে এ চক্রের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। চুরির পর ওই চক্রের সদস্যরা বেনামে নিবন্ধিত মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহার করে গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। গাড়ি ফেরত দেওয়ার শর্তে তিনি মালিকের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নেন। ভিকটিম বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানালে তারা গাড়িটি খুলে বিক্রি করে দিত।
অভিযানে পাঁচটি পিকআপ ভ্যান উদ্ধার
করা হয়েছে।ডিবির ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার মাহবুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজিজুল পড়াশোনা করেননি। কিন্তু সে খুব চালাক। দুই শতাধিক পিকআপ ভ্যান চুরি করে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন তিনি। ভুক্তভোগীদের সাথে তিনি যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন তা ব্যবহার করে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ভিকটিমদের সাথে যোগাযোগ করেন না। উন্নয়ন ও নগদ হিসাবও বেনামী করা হয়েছে।ডিবি কর্মকর্তারা জানান, চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন বাসা ও গ্যারেজ থেকে মিনি পিকআপ চুরি করে। এই ক্ষেত্রে, তারা ‘মাস্টার কী’ ব্যবহার করে। তারা মূলত গভীর রাতে গাড়ি চুরি করে। চুরির কিছুক্ষণ পর তারা গাড়ির মালিককে ফোন করে টাকা দাবি করে।
জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের প্রধান
আজিজুলের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, আজিজুল ১৯৯৬ সালে কিশোর বয়সে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় আসেন। প্রথমে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ২০০৬ সালে, তিনি বাস চালকের সহকারী হিসাবে চাকরি নেন। ২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জে গিয়ে অটোরিকশা চালানো শুরু করেন। অটোরিকশা চালাতে গিয়ে চোর চক্রে জড়িয়ে পড়েন। পিকআপ ভ্যান চুরি করলে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পেতেন। ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে পাঠানোর পর, তিনি একটি নতুন চক্র শুরু করার এবং আরও উপার্জন করার সিদ্ধান্ত নেন। সাত মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়ে নতুন চক্র গঠন করেন তিনি। তার চক্রের বেশিরভাগ সদস্যই অটোরিকশাচালক।